,

আবার স্কুলে যাবে মনিরা

পাবনা প্রতিনিধি: বিকেলেই বিয়েবাড়িতে আসেন বরযাত্রীরা। খাওয়া-দাওয়ার পর্বও শেষ। ডাকা হয়েছে কাজি। সময় গড়িয়ে বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যায় বিয়েবাড়িকে আরও জমজমাট করে তুলেছে। এখন শুধু অপেক্ষা বিয়ে পড়ানো। কিন্ত এরই মধ্যে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস এম জামাল আহমেদ ও থানার ওসি আসাদুজ্জামান পুলিশ ফোর্স নিয়ে বিয়েবাড়িতে হাজির হন। তাদের দেখে পালিয়ে যায় বরপক্ষ। কিন্ত ধরা খান ঘটকসহ আয়োজকদের তিনজন। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেন ইউএনও। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার তলট গ্রামে এ ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একমাস পর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা মনিরা খাতুনের (১২)। এরই মাঝে তার বাবা সাঁথিয়া উপজেলার তলট গ্রামের মনিরুল ইসলাম মনিরার বিয়ে ঠিক করেন। পাশের বেড়া উপজেলার কাবাসকান্দা গ্রামের ভজা সেখের ছেলে গোলাম রাব্বি সেখের (২৪) সঙ্গে শুক্রবার বিয়ের দিন ধার্য হয়। এ বিয়েতে যৌতুকের পরিমাণ নির্ধারিত ছিল ৪০ হাজার টাকা।

ইউএনও এসএম জামাল আহমেদ বিকেলে গোপনসূত্রে এ বাল্য বিয়ের খবর পান। তিনি সাঁথিয়া থানার ওসি ও পুলিশ ফোর্স নিয়ে তাৎক্ষণিক রওয়ানা দেন বিয়েবাড়িতে। তাদের দেখে বরসহ বরপক্ষের লোকজন পালিয়ে গেলেও বাল্য বিয়ে দেবার চেষ্টায় বিয়ের আসর থেকে ঘটক মেয়ের নানা ইসমাইল হোসেন (৫৫), বরের চাচা আনোয়ার হোসেন (৩২) ও বরের বন্ধু শাহীন শেখকে (২২) আটক করা হয়। সেখানে সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রত্যেককে ১ মাস করে কারাদন্ড দেন ইউএনও। পরে ওই ছাত্রীর মা হাসিনা খাতুন মনিরার ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না মর্মে মুচলেকা দিয়ে মেয়েকে বুঝে নেন। সাজাপ্রাপ্ত তিনজনকে পুলিশে দেয়া হয়।

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এসএম জামাল আহমেদ জানান, ৫ম শ্রেণির ছাত্রী মনিরা খাতুনের লেখাপড়া বাবদ সব ব্যয়ভার উপজেলা প্রশাসন থেকে বহন করা হবে। শনিবার থেকেই মনিরা আবার স্কুলে যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর